মাঝে কিছুটা শান্তি ফিরলেও ফের নতুন করে অশান্ত হয়ে উঠেছে ভারতের উত্তরা-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুর। পুলিশের গুলিতে এক যুবকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিজেপি ও কংগ্রেসের কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে আরও ৫০ কম্পানি কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী (সিএপিএফ) পাঠাচ্ছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ওই রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আনন্দবাজার পত্রিকা গতকাল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, স্থানীয় সময় রবিবার গভীর রাতে জিরিবাম জেলার বাবুপাড়া এলাকায় বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে গুলি চালায় পুলিশ। এতে ২০ বছর বয়সী এক তরুণের মৃত্যু হয়। এর পরই উত্তেজিত জনতা বিজেপি ও কংগ্রেসের দুটি দলীয় কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। জিরিবাম থানার পাশে অবস্থিত দুই দলের দপ্তরে ঢুকে চেয়ার-টেবিল এবং অন্য আসবাবেও আগুন ধরিয়ে দেয় উন্মত্ত জনতা।
এর আগে রাজধানী ইম্ফলে বিজেপি দপ্তরে ভাঙচুর চালানো হয়েছিল।
গত সপ্তাহের সোমবার জিরিবাম জেলার আসাম সীমানা সংলগ্ন অঞ্চল থেকে ছয়জনকে অপহরণ করা হয়েছিল। অভিযোগের তীর ছিল কুকি গোষ্ঠীর দিকে। দিনকয়েক পর নদীতে ছয়টি মরদেহ ভেসে আসে।
এ নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়। নদীতে মরদেহ পাওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে মেইতেই গোষ্ঠী। স্থানীয় সময় শনিবার রাতে রাজ্যের ছয় বিধায়কের বাড়িতে হামলা চালায় বিক্ষুব্ধ জনতা। এমনকি ইম্ফল পূর্ব জেলার লুয়াংশাংবামে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের পৈতৃক বাড়িতে হামলার চেষ্টাও হয়। তাদের নিরস্ত করতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়।
গত রবিবারও জিরিবাম জেলার জিরি নদীতে মরদেহ ভাসতে দেখা যায়। এর মধ্যে একটি ছিল ষাটোর্ধ্ব নারীর এবং অন্যটি বছর দুয়েকের এক শিশুর। শিশুর মরদেহটি মুণ্ডহীন ছিল। রবিবারই মেইতেই গোষ্ঠী মণিপুর সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি অভিযুক্তদের ধরা না হয়, বিক্ষোভ আরো তীব্র হবে। রবিবার রাত থেকে জিরিবাম জেলায় একের পর এক সহিংস ঘটনা ঘটতে থাকে। সহিংস ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে এখন পর্যন্ত ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে মণিপুর পুলিশ। তারা সবাই ইম্ফল পূর্ব, ইম্ফল পশ্চিম এবং বিষ্ণুপুর এলাকার বাসিন্দা। রাজধানী ইম্ফলসহ বিস্তীর্ণ এলাকায় জারি করা হয়েছে কারফিউ। ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ রয়েছে।
কারফিউয়ের মধ্যেই রবিবার রাতে জিরিবামের অন্তত পাঁচটি গির্জা, স্কুল, পেট্রল পাম্প এবং বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়। কোথাও কোথাও অগ্নিসংযোগ করার অভিযোগও উঠেছে। কে বা কারা এই হামলা করেছে, তা অবশ্য এখনো স্পষ্ট নয়।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
খুলনা গেজেট/এইচ